ভোক্তার খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি কৃষকের স্বার্থ দেখতে হবে - মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

ভোক্তার খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি কৃষকের স্বার্থ দেখতে হবে  - মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ভোক্তার খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি কৃষকের স্বার্থ দেখতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তায় জোর দিতে গিয়ে কৃষকের দিকটা সেভাবে দেখা হয় না। শহুরে মানুষের খাদ্য জোগান এবং দাম নাগালে রাখতে আমদানির মাধ্যমে কৃষকের ক্ষতি করার চেষ্টা করা হয়। আমাদের খাদ্যে সার্বভৌমত্ব অর্জন করতে হবে, যাতে ভোক্তা এবং কৃষক দুই পক্ষই উপকৃত হন। 

 

উপদেষ্টা আজ ঢাকায় প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁওয়ে বণিক বার্তার আয়োজনে ‘কৃষি, খাদ্যনিরাপত্তা ও কৃষকের ন্যায্যতা সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন ‘খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষকের ন্যায্যতা’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের কথা বলা হচ্ছে। সেটা করতে গিয়ে কোনো ক্ষতি করছি কি না সেটিও দেখতে হবে। এ কারণে গবাদিপশুর ব্যবহার কমে যাচ্ছে। এখানে ভোক্তার দিকটাও দেখতে হবে যেন তারা নিরাপদ খাদ্য পায়। আবার কৃষকের দিকটাও দেখতে হবে যেন তারা উৎপাদন করে লাভবান হন। খাদ্য উৎপাদন করতে গিয়ে যদি প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে ফেলি তাহলে আবার সেটি খাদ্য পণ্য না হয়ে শিল্প পণ্য হয়ে যাবে। যদি কৃষি পণ্যকে শিল্প পণ্যের মত উৎপাদন করলে তা খাদ্য থাকবে না এবং সেখানে কৃষকও থাকবে না।

 

উপদেষ্টা বলেন, এক সময় কৃষির অধীনেই মৎস ও প্রাণী সম্পদ ছিল। এখন এগুলো আলাদা হয়েছে। মৎসের ক্ষেত্রে আমরা যদি দেখি, উন্মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ আরোহণে বাংলাদেশ ভারতের পরই ২য় স্থানে আছে। অথচ আমরা হাওর, নদী-নালা ধ্বংস করছি। জলাশয়গুলোকে রক্ষা করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে কৃষিতে ব্যবহৃত কীটনাশকে মাছ মারা যাচ্ছে। হাওরে কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাওর মাছের অনেক বড় একটি উৎস। অনেক সময় আগাছা পরিষ্কার না করে কীটনাশক দিয়ে সেগুলো ধ্বংস করা হয়। এতে গরু ছাগলসহ অন্যান্য প্রাণির ক্ষতি হচ্ছে।

 

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমাদের মাংস উৎপাদন চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি। আমাদের এক কোটি ২৪ লাখের বেশি গরু ছাগল মজুদ আছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা থেকে মাংস আমদানির জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এটি করলে খামারিরা টিকে থাকতে পারবে না।

 

বণিক বার্তার সম্পাদক ও প্রকাশক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলম, টি.কে গ্রুপের গ্রুপ ডিরেক্টর মোহাম্মদ মুস্তফা হায়দার, এসিআই এগ্রি বিজনেস ডিভিশনের প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারী,  ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান, সরকারি-বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা  এসময় উপস্থিত ছিলেন।

 

 

সূত্রঃপিআইডি